করোনা ভাইরাসের আতংকে সারা দেশের বিভিন্ন মন্দির কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই ভক্তদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করেছে। এবার প্রায় সেই একই পথ অনুসরণ করলো বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দির ট্রাষ্ট কমিটি। মঙ্গলবার বর্ধমানের এই সর্বমঙ্গলা মন্দির ট্রাষ্ট কমিটি জরুরী বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভোগ বিতরণ, ভোগ খাওয়া ও ভোগ রান্না বন্ধ করে দেওয়া হল।
নয়নয় করেও বর্ধমানের এই অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরের বয়স প্রায় ২৮০ বছর। জানা যায়, ১৭৪০ সালে বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচাঁদ সর্বমঙ্গলা মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দির নির্মাণ করেন মহতাব চাঁদ। দামোদর নদের ধারে বাহির সর্বমঙ্গলা অঞ্চলে বসবাস করা চুনুরীদের কাছ থেকে পাওয়া কষ্টিপাথরের অষ্টাদশ ভূজা এই দেবী মূর্তি বর্ধমান শহরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। মন্দির কমিটির সূত্রে জানা গেছে, এই মন্দির তথা দেবী প্রতিষ্ঠার পর কার্যত ২৮০ বছরেও কোনো ছেদ পড়েনি মন্দিরের ভোগ বিতরণে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের জেরে সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ল।
এদিনই সর্বমঙ্গলা ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে মন্দিরে ভোগ রান্না বন্ধ রাখার নির্দেশিকা মন্দিরের গায়ে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত অরুণ ভট্যাচার্জ বলেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনেই ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিদিন মায়ের যে ভোগ রান্না হয় তা বন্ধ করা হচ্ছে না। মন্দিরে পুজো দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় নি। তবে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী ও মন্দিরের পুরোহিতদের বলা হয়েছে মন্দির চত্বরে কোনভাবেই ভীড় করা যাবে না। সেই বিষয়ে সকলেই সজাগ থাকবে।
অন্যদিকে মায়ের ভোগ না পাওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে ভক্তদের,পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের জেরে মা সর্ববমঙ্গলা মন্দিরের লাগোয়া পূজা অর্চনার সামগ্রীর দোকান পাট লাটে উঠেছে বলে জানান দোকানদার। অন্যদিকে ভক্তদের নিত্যদিনের যে সমাগম মন্দিরে হতো তাতে করে ইকোরিক্সা চালকরা ভাড়া পেতেন,কিনতু ভক্তদের না আসায় ভাটা পড়েছে তাদের রুজিতে। করোনা ভাইরাসে এখন চিন্তিত সকলেই, কি করবেন বুঝে উঠতে পারছে না ।
ছবি - পিন্টু প্যাটেল