করোনা আতঙ্কে বন্ধ হয়ে গেল বর্ধমান সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভোগ বিতরণ

18th March 2020 বর্ধমান
করোনা আতঙ্কে বন্ধ হয়ে গেল বর্ধমান সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভোগ বিতরণ


করোনা ভাইরাসের  আতংকে সারা দেশের বিভিন্ন মন্দির কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই ভক্তদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করেছে। এবার প্রায় সেই একই পথ অনুসরণ করলো বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দির ট্রাষ্ট কমিটি। মঙ্গলবার বর্ধমানের এই সর্বমঙ্গলা মন্দির ট্রাষ্ট কমিটি জরুরী বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভোগ বিতরণ, ভোগ খাওয়া ও ভোগ রান্না বন্ধ করে দেওয়া হল। 

নয়নয় করেও বর্ধমানের এই অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরের বয়স প্রায় ২৮০ বছর। জানা যায়, ১৭৪০ সালে বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচাঁদ সর্বমঙ্গলা মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দির নির্মাণ করেন মহতাব চাঁদ। দামোদর নদের ধারে বাহির সর্বমঙ্গলা অঞ্চলে বসবাস করা চুনুরীদের কাছ থেকে পাওয়া কষ্টিপাথরের অষ্টাদশ ভূজা এই দেবী মূর্তি বর্ধমান শহরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। মন্দির কমিটির সূত্রে জানা গেছে, এই মন্দির তথা দেবী প্রতিষ্ঠার পর কার্যত ২৮০ বছরেও কোনো ছেদ পড়েনি মন্দিরের ভোগ বিতরণে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের জেরে সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ল। 

এদিনই সর্বমঙ্গলা ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে মন্দিরে ভোগ রান্না বন্ধ রাখার নির্দেশিকা মন্দিরের গায়ে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত অরুণ ভট্যাচার্জ বলেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনেই ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিদিন মায়ের যে ভোগ রান্না হয় তা বন্ধ করা হচ্ছে না। মন্দিরে পুজো দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় নি। তবে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী ও মন্দিরের পুরোহিতদের বলা হয়েছে মন্দির চত্বরে কোনভাবেই ভীড় করা যাবে না। সেই বিষয়ে সকলেই সজাগ থাকবে। 
অন্যদিকে মায়ের ভোগ না পাওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে ভক্তদের,পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের জেরে মা সর্ববমঙ্গলা মন্দিরের লাগোয়া পূজা অর্চনার সামগ্রীর দোকান পাট লাটে উঠেছে বলে জানান দোকানদার। অন্যদিকে ভক্তদের নিত্যদিনের যে সমাগম মন্দিরে  হতো তাতে করে ইকোরিক্সা চালকরা ভাড়া পেতেন,কিনতু ভক্তদের না আসায় ভাটা পড়েছে তাদের রুজিতে। করোনা ভাইরাসে এখন চিন্তিত সকলেই, কি করবেন বুঝে উঠতে পারছে না ।

       ছবি - পিন্টু প‍্যাটেল 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।